এন্ড্রয়েড’র স্ন্যাপড্রাগন ৮২০ চিপসেট ফিচার
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
বেশ কিছুদিন ধরেই প্রযুক্তি বাজারে স্ন্যাপড্রাগন ৮২০ চিপসেটটিকে নিয়ে বিভিন্ন প্রকার গুজব শোনা যাচ্ছিল এবং শেষ পর্যন্ত যেন সেই রটে যাওয়া গুজবগুলোকে সত্যি প্রমাণিত করতেই কোয়ালকম উন্মোচন করল তাদের নতুন নেক্সট-জেনারেশন চিপসেট স্ন্যাপড্রাগন ৮২০ যা নিঃসন্দেহে আগামী বছরের সব ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইসগুলোতে ব্যবহার করা হবে। কোয়ালকম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী স্ন্যাপড্রাগন ৮২০ চিপসেটটি তাদের নির্মিত প্রথম চিপসেট যাতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৪ ন্যানোমিটার ফিনেট(FinFET) প্রযুক্তি এবং এতে রয়েছে কাস্টম-মেড ৬৪-বিট কাইরো সিপিইউ যা স্ন্যাপড্রাগন ৮১০ চিপসেটটি থেকে প্রায় দ্বিগুণ পারফর্মেন্স এবং পাওয়ার এফিসিয়েন্সি প্রদান করতে সক্ষম।
কুইক চার্জ ৩.০: স্ন্যাপড্রাগন ৮২০ চিপসেটে রয়েছে কুইক চার্জ ৩.০ সুবিধা যা বর্তমানে কোয়ালকমের সর্বাধুনিক চার্জিং স্ট্যান্ডার্ড। খাতা-কলমের হিসেব অনুযায়ী কুইক চার্জ ৩.০ এর পূর্বের কুইক চার্জ ২.০ এর চাইতে প্রায় ৩৮ শতাংশ দ্রুত চার্জ করতে সক্ষম। আপনি লক্ষ্য করলেই ২০১৫ সালের বেশিরভাগ সেরা ডিভাইসগুলোতে কুইক চার্জ ২.০ সাপোর্ট দেখতে পাবেন।
উদাহরণস্বরূপ-এলজি ভি১০, মটো এক্স পিওর এডিশন এবং ড্রয়েড টার্বো। আপনি যদি কুইক চার্জ প্রযুক্তির সঙ্গে পূর্ব পরিচিত না হন তবে আপনাকে সহজে বোঝানোর জন্য বলব-কুইক চার্জ ৩.০ প্রযুক্তিটি যে কোনো রেগুলার চার্জিং প্রযুক্তির থেকে প্রায় ৪ গুণ দ্রুত কাজ করে থাকে।
ফটোরিয়েলেস্টিক গ্রাফিক্স: আগেই বলেছি এই চিপসেটটিতে ব্যবহার করা হয়েছে আপগ্রেডেড অ্যাড্রিনো ৫৩০ জিপিইউ যা পূর্বের ৪৩০ এর চাইতে প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পাওয়ার এবং এফিসিয়েন্সি প্রদান করতে সক্ষম। আর যেহেতু এও বলেছি যে এই চিপসেটটি ব্যবহার হবে আগামী বছরের বেশিরভাগ ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইসে তাই আগামী বছর যে আমরা আরও চমৎকার গ্রাফিক্স পেতে যাচ্ছি সেটা বলাটা কোনো রকেট সায়েন্স নিশ্চয়ই নয়। গ্রাফিক্স ইউনিট আপগ্রেড করার পেছনে যে কয়টি কারণ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে সবচাইতে বড় কারণ সম্ভবত ৪কে রেজ্যুলেশন। আমরা এবছরেই বেশ কিছু ৪কে রেজ্যুলেশন সমৃদ্ধ স্মার্ট-ডিভাইস প্রযুক্তি বাজারে দেখেছি আর ভবিষ্যতে এর চল বাড়বে এমনটাই স্বাভাবিক। তাই আরও রিচ ডিটাইল দেয়ার জন্য এই আপগ্রেডটির প্রয়োজন বলা চলে এক প্রকারের আবশ্যকই ছিল।
ত্রিমাত্রিক অডিও: বর্তমানের বিভিন্ন ডিভাইসেই পারফর্মেন্সের দিকে নজর দেয়া হলেও কোনো এক অজ্ঞাত কারণে সাউন্ড-কোয়ালিটি নিয়ে তেমন একটা কাজ করা হয়নি। তবে কোয়ালকম এই ঘটনার পরিবর্তন ঘটাতে চিপসেটটিতে যোগ করেছে এমন একটি প্রযুক্তি যা স্মার্টফোনের ফ্রন্ট-ফেসিং স্পিকারের মাধ্যমে সাররারাউন্ড সাউন্ড প্রদান করতে সক্ষম হবে।
আল্ট্রাসনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর: কোয়ালকমের সেন্স আইডি আল্ট্রাসনিক সাউন্ড প্রযুক্তির মাধ্যমে স্মার্টফোনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডারকে নিয়ে যাবে একটি নতুন পর্যায়ে কেননা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার গ্লাস এবং অ্যালুমিনিয়ামের লেয়ারকে ভেদ করেও ব্যবহারকারীর নির্ভুল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংরক্ষণ করতে সক্ষম। ফলে এখন থেকে আর ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডারকে হোম বাটন বা ডিভাইসের পেছনেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে না। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে কোনো স্থানেই যুক্ত করা যেতে পারে ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডারকে। পাশাপাশি নতুন এই প্রযুক্তির ফিঙ্গারপ্রিন্টের একটি ডেমো পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে এটি অ্যাপলের আইফোন ৬এস ডিভাইসটিতে থাকা টাচ আইডির মতই দ্রুত কাজ করে থাকে।
প্রতিক্ষণ/এডি/এআরকে